Auto Ads 1

ঝালকাঠি জেলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ

ঝালকাঠি


সবুজ মাঠ গাছ-গাছালী, নদী-নালা, খাল-বিল, অপার সৌন্দর্য্যমন্ডিত ৭৫৮.০৬ বর্গকিলোমিটার আয়তন বিশিষ্ট পরিপাটি জেলা ঝালকাঠি। কবি জীবনানন্দ দাশ এর বিখ্যাত কবিতা আবার আসিব ফিরে কবিতার ধানসিঁড়ি নদীটি এ জেলায় অবস্থিত । এ জেলার আছে এক গৌরব উজ্জ্বল ইতিহাস । এ জেলাটি বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে অবস্থিত হলে ও এর কিছু বৈশিষ্ট রয়েছে ।সুগন্দা বিশখালি ধানসিঁড়ির মতো বিখ্যাত নদী এ জেলায় বুক চিড়ে প্রবাহিত।

অবস্থান : ভৌগলিকভাবে ঝালকাঠি জেলাটি ২০০-২০’ থেকে ২২.৪৭ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০-০১’ থেকে ৯০-২৩’ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত।

সীমানা : ঝালকাঠি জেলার উত্তরে ও পূর্বে বরিশাল জেলা অবস্থিত, দক্ষিনে বরগুনা জেলা, পূর্বে- পটুয়াখালী জেলা ও পশ্চিমে রয়েছে পিরোজপুর জেলা। আয়তন : ঝালকাঠি জেলার আয়তন ৭৫৮.০৬ বর্গ কিঃ মিঃ।

ঝালকাঠি জেলার ইতিহাস

ঝালকাঠি পূর্বে বরিশাল জেলার অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১ এপ্রিল ১৮৭৫ সালে ঝালকাঠি পৌরসভার গোড়াপত্তন হয়। ব্রিটিশ শাসনামলে সেনাবাহিনী কর্তৃক কুলকাঠিতে ১৭ জন মুসলমান নিহত হন। স্থানীয় দাঙ্গা নিরসন ও শৃঙ্খলা প্রদানের জন্য ১৮৮২ সালে ঝালকাঠিতে একটি পুলিশ থানা স্থাপন করা হয়। নদী বন্দরের জন্য ঝালকাঠি সবসময় ইউরোপীয়দের আকর্ষণ করেছে। ফলে বিভিন্ন সময়ে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি, ডাচ ও ফরাসিরা এখানে ব্যবসা কেন্দ্র খুলেছিল। বাণিজ্যিক গুরুত্বের জন্য ঝালকাঠিকে দ্বিতীয় কলকাতা বলা হত। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ঝালকাঠি সদর উপজেলার রেজাউল করিম ২৪ সদস্য বিশিষ্ট মানিক বাহিনী গড়ে তোলেন। কিছু স্থানীয় রাজাকার এর সহায়তায় ১৬ই জুন ১৯৭১ সালে পাক-হানাদার বাহিনী তাদের হত্যা করে। ২৭শে এপ্রিল হানাদার বাহিনী ঝালকাঠি শহরে আগুন ধরিয়ে দেয় ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের পরে ১৯৭২ সালের ১ জুলাই, ঝালকাঠি থানাকে বরিশাল জেলার মহকুমায় উন্নীত করা হয়। ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৪ সালে প্রশাসনিক সুবিধার জন্য ঝালকাঠি থানাকে বরিশাল জেলা থেকে পৃথক করে পূর্ণাঙ্গ জেলায় পরিণত করা হয় ।

ঝালকাঠি জেলার প্রশাসনিক কাঠামো

ঝালকাঠি জেলায় উপজেলার সংখ্যা ৪টি। উপজেলাগুলো হল- ঝালকাঠি সদর, নলছিটি, রাজাপুর ও কাঠালিয়া। এ জেলায় রয়েছে ২টি পৌরসভা; যেগুলো ‘ঝালকাঠি সদর ও নলছিটি’ নামেই পরিচিত। এ জেলায় ৪টি থানা ও ৩২টি ইউনিয়ন রয়েছে। ইউনিয়নগুলোর মধ্যে ১০টি ঝালকাঠি সদর, ০৬টি কাঠালিয়া, ১০টি নলছিটি ও ৬টি রাজাপুরে অবস্থিত। এছাড়া ৪৭১টি গ্রাম, ৪১২টি মৌজা, ৩১টি্ইউনিয়ন ভূমি অফিসসহ ৮৯টি হাট-বাজারের সম্মিলন ঘটেছে এ জেলায়।

৪০০টি মৌজা, ৪৪৯টি গ্রাম ২টি সংসদীয় আসন নিয়ে ঝালকাঠি জেলা গঠিত।


ঝালকাঠি জেলার দর্শনীয় স্থান সমুহর নাম

ঐতিহাসিক দর্শর্ণীয় স্থান : এ জেলার ঐতিহাসিক দর্শণীয় স্থানগুলোর মধ্যে রাজাপুর সাতুরিয়া জমিদার বাড়ি, কবি জীবনানন্দ দাশ এর মামা বাড়ি ও কীর্ত্তিপাশা জমিদার বাড়ি উলেস্নখযোগ্য। এছাড়া অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে রয়েছে গাবখান সেতু, ধানসিঁড়ি নদী, রূপসা খাল, গালুয়া পাকা মসজিদ, নেছারাবাদ কমপেস্নক্স, পোনাবালিয়া মন্দির, সিদ্ধকাঠী জমিদার বাড়ি, নলছিটি পৌর ভবন, চায়না কবর, কামিনী রায়/ যামিনী সেনের বাড়ী ইত্যাদি।


ঝালকাঠি জেলার প্রধান নদীগুলোর নাম

  • কীর্তনখোলা নদী
  • খায়রাবাদ নদী
  • বিষখালী নদী
  • সুগন্ধা নদী
  • ধানসিঁড়ি নদী,
  • গাবখান নদী
  • জাংগালিয়া নদী ও বাসন্ডা নদী।
সুজাবাদ কেল্লা, ঘোষাল রাজবাড়ী, পুরাতন পৌরসভা ভবন, মাদাবর মসজিদ, সুরিচোরা জামে মসজিদ। নেছারাবাদ মাদ্রাসা, গাবখান সেতু, কীর্ত্তিপাশা জমিদার বাড়ি

ঝালকাঠি শহরে শেরে বাংলা এ.কে. ফজলুল হকের মা সৈয়দুন্নেছার বাবার বাড়ি অবস্থিত। এ ছাড়াও শহরের প্রাণকেন্দ্রে সুগন্ধা নদীর তীরে অবস্থিত ঝালকাঠি পৌরসভা কর্তৃক নির্মিত পৌর মিনিপার্ক শহরবাসীদের প্রমোদের একটি স্থান।

ঝালকাঠির যোগাযোগ ব্যাবস্থা

ঝালকাঠী শহরের পশ্চিম প্রান্তে গাবখান ব্রীজ খুলনা–বরিশাল মহাসড়কে সংযুক্ত করে ঝালকাঠীকে। শহরের অভ্যন্তরীণ যাতায়াতের ক্ষেত্রে রিকশা, টেম্পু, বাস জনপ্রিয় যানবাহন।

ঝালকাঠি জেলা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার তথ্য

১৮৭৫ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক ঝালকাঠি শহরের পরিচালনার জন্য ঝালকাঠি পৌরসভা স্থাপিত হলে এ শহর পৌরশহরের মর্যাদা লাভ করে। পৌর শহরটি থানা সদরের স্বীকৃতি পায় ১৯০০ সালে। ১৯৮৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারি পূর্ণাঙ্গ জেলা হিসেবে ঝালকাঠি জেলা প্রতিষ্ঠিত হলে ঝালকাঠি শহরকে জেলা শহরের মর্যাদা দেওয়া হয়।

Post a Comment

0 Comments

Ads 4