Auto Ads 1

দাতের ব্যথায় করনীয় এবং ঘরোয়া টোটকা

Toothache and home remedies for toothache

দাঁতের ব্যথা হচ্ছে দাঁতে বা তাদের সমর্থনকারী কাঠামোতে ব্যথা, যা দাঁতের ব্যাধি বা দাঁত ছাড়া অন্য রোগের দ্বারা দাঁতে বাহিত ব্যথার কারণে হতে পারে। গুরুতর হলে এটি ঘুম, খাওয়া এবং অন্যান্য দৈনন্দিন কার্য্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।

খাবার খাওয়ার সময় দাতের ব্যথাঃ

খাবার খাওয়ার সময় খাবারের ধ্বংসাবশেষ, বিশেষত মাংসের মতো তন্তুযুক্ত খাবার দুটি দাঁতের মধ্যে আটকে যায় এবং চিবানোর সময় মাড়ির মধ্যে মিশে যায়। খাদ্য আটকে যাওয়ার স্বাভাবিক কারণ হ'ল দাঁতগুলির মাঝে ফাঁকা জায়গা । ক্ষয়ের কারণে দাঁতের কিছু অংশ ধসে পড়তে পারে বা দাঁত পুনরুদ্ধারের স্থানটি সঠিকভাবে নাও হতে পারে। জ্বালাপোড়া, অস্বস্তি বা হালকা ব্যথা এবং দুই দাঁতের মধ্যে থেকে চাপের অনুভূতির ফলাফল। জিঞ্জিভাল পেপিলা ফোলা, কোমল এবং স্পর্শকালে রক্তক্ষরণ হয়। খাওয়ার সময় এবং পরে ব্যথা হয় এবং পরবর্তী খাবারের আগে ধীরে ধীরে অদৃশ্য হয়ে যেতে পারে, বা জড়িত অঞ্চলে দাঁত বাছাই বা ডেন্টাল ফ্লস ব্যবহার করে তাত্ক্ষণিকভাবে উপশম হতে পারে ।

ছোটোবেলা থেকেই দাঁতের যত্ন নেওয়ার কথা শুনে আসছি আমরা । বড়দের কাছ থেকে দাঁতের যত্ন নেওয়ার নানা উপায়ও শিখেছি। কিন্তু দাঁতের গোড়া বা স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হলে তখন মারাত্মক যন্ত্রণা হয়ে থাকে। দাতের ব্যথার কারনে চোখে ব্যথা, মাথা ব্যথার মতো নানা সমস্যা এক সঙ্গে দেখা দিতে পারে ।

দাঁতের ব্যথা বাড়লে দেরি না করে অভিজ্ঞ দন্ত চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নেয়া সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ। তবে কোনও কারণে যদি চিকিৎসকের কাছে যাওয়াটা সম্ভব না হয় বা ওই সময় যদি আসেপাশে দন্ত চিকিৎসকের সেবা কেন্দ্র না থাকে তাহলে কী করবেন? এ ক্ষেত্রে খুব সহজ একটি ঘরোয়া উপায় বা ঘরোয়া টোটকা দাঁতের ব্যথা সাময়িক ভাবে কমিয়ে দিতে পারে।

হঠাৎ যদি দাঁতে ব্যথা শুরু হয়ে যায়, দিশেহারা হয়ে আমরা ওষুধের খোঁজ করি। কিন্তু কিছু উপায় জানা থাকলে কয়েক মিনিটের মধ্যেই দাঁত ব্যথার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।



আরও পড়ুন - ঠান্ডা সর্দি সারাতে জেনে নিন ঘোরোয়া উপায়

ঘরোয়া উপায়ে দাতের ব্যথার চিকিতসাঃ

উপকরণঃ
১/ নারিকেল তৈল
২/ লবঙ্গ

চা চামচের আধা চামচ নারকেল তেল,এবং আধা চামচ লবঙ্গের গুঁড়ো নিন ।

নারকেল তেলে রয়েছে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য আর লবঙ্গের গুঁড়োয় রয়েছে ইউজিনল নামের একটি রাসায়নিক উপাদান যা ব্যথা উপশমে খুবই কার্য্যকরি ।

  

প্রস্তুত প্রণালী ও ব্যবহার:

একটি কাঁচের পাত্রে নারকেল তেল এবং লবঙ্গের গুঁড়ো ভাল করে মিশিয়ে নিন। টুথব্রাশের সাহায্যে এই পেস্টটি দাঁত বা মাড়ির আক্রান্ত স্থানে ভালো করে লাগিয়ে নিন। দিনে তিন থেকে চার বার এই মিশ্রণটি দাঁত বা মাড়ির আক্রান্ত স্থানে লাগালে দাতের ব্যথা দ্রুত উপশম হয় ।

দাতের ব্যথায় লবঙ্গঃ

দুটি লবঙ্গ থেঁতো করে কয়েক ফোঁটা অলিভ অয়েলের সঙ্গে মিশিয়ে দাঁতে লাগান। অথবা দুটি লবঙ্গ চিবিয়ে ব্যথার স্থানে জিভ দিয়ে চেপে ধরে রাখুন।

দাতের ব্যথায় রসুনঃ

এক কোয়া রসুন থেঁতলে নিয়ে অল্প একটু লবণ মিশিয়ে দাঁতের ব্যথার স্থানে লাগান। বেশি যন্ত্রণা হলে এক কোয়া রসুন চিবিয়ে খেয়ে নিন ।

দাতের ব্যথায় গোল মরিচঃ

লবণের সঙ্গে গোলমরিচ মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। দাঁতের ব্যথার স্থানে লাগিয়ে রাখুন কয়েক মিনিট। দ্রুত ব্যথা উপশম হবে। ব্যথা কমে গেলেও কয়েকদিন এই মিশ্রনটি ব্যবহার করুন।

দাতের ব্যথায় কাচা পেয়াজঃ

এক টুকরা কাঁচা পেঁয়াজ চিবিয়ে খেয়ে নিন। যদি বেশি ঝাঁঝ লাগে তবে ব্যথার স্থানে পেঁয়াজ চেপে ধরে রাখলে বেশ আরাম পাওয়া যায় এবং কিছুটা ব্যথা কমে যায় ।

দাতের ব্যথায় লবন পানিঃ

লবণ পানি দাঁত, মাড়ি, গলার ব্যথা কমাতে খুব ভাল কাজ করে । এক গ্লাস অল্প গরম পানিতে এক চা চামচ লবণ মিশিয়ে কুলকুচি করুন। এইভাবে কিছুক্ষন কুলকুচি করলে দাতের ব্যথার উপশম হয় ।

দাতের ব্যথায় পেয়ারাঃ

পেয়ারার পাতা দাঁত ব্যথায় বেশ উপকারী। একটি বা দুটি পেয়ারার পাতা চিবিয়ে ব্যথার স্থানে চেপে ধরে বেশ আরাম পাওয়া যায় ।

দাতের ব্যথায় ভ্যানিলাঃ

কয়েক ফোঁটা ভ্যানিলা সামান্য কিছু তুলা সাথে মিশিয়ে নিন এবং ভ্যানিলা মেশানো তুলাটি দাঁতে চেপে ধরে রাখুন। কয়েক মিনিটের মধ্যে দাতের ব্যাথার উপশম পাওয়া যাবে ।

দাতের ব্যথায় দুর্বা ঘাসঃ

দাতের ব্যথায় দূর্বা ঘাসের রস বেশ আরাম দায়ক । এটা দাঁতের স্বাস্থ্য ভাল রাখতেও বেশ সহায়তা করে।

দাতের ব্যথায় বরফঃ

দাতের ব্যথার সময় হাতের কাছে কোনো কিছু না পাওয়া গেলেও, যদি শুধু বরফ পাওয়া যায়, তবে এক টুকরা বরফ তুলা বা কাপড়ে মুড়ে দাঁতের ব্যথার স্থানে চেপে ধরে রাখুন, অল্প সময়ের মধ্যে ব্যথা কমে যাবে ।


দাতের ব্যথা হওয়ার আগেই প্রতিরোধ করুনঃ

যেহেতু বেশিরভাগ দাঁতে ক্ষয় এবং পেরিওডন্টাল রোগের মতো প্লাগজনিত রোগে, ক্যারিয়োজেনিক ডায়েট এড়ানো এবং ভাল মৌখিক স্বাস্থ্যবিধি মানলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রতিরোধ করা যেতে পারে। দৈনিক চিনি খাওয়া কমিয়ে এবং দিনে দুবার ফ্লোরাইড যুক্ত মাজন দিয়ে দাঁত মাজলে এবং দুই দাঁতের মধ্যবর্তী স্থান পরিচ্ছন্ন রাখলে। ডেন্টিস্টের সাথে নিয়মিত সাক্ষাত করা যাতে দাঁত ব্যথা শুরু হওয়ার আগেই সমস্যাগুলি শনাক্ত করা, বা সমস্যার সমাধানের করা যেন দাঁত ব্যথা হতেই না পাড়ে। পারস্পরিক সাংঘর্ষিক খেলায় মাউথগার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে দাঁতের ট্রমাও উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস করা যেতে পারে।

তবে দাঁতের যথাযথ যত্ন নিতে বছরে অন্তত দু’বার দন্ত চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত। দন্ত চিকিৎসকের নির্দেশ মেনে সঠিক পদ্ধতিতে দাঁতের যত্ন নিন।

Post a Comment

0 Comments

Ads 4