Auto Ads 1

ভালো মানুষের গুনাগুন ও খারাপ মানুষ চেনার উপায়

My Son My Life

একজন ভালো মানুষ এবং একজন খারাপ মানুষের মধ্যে পার্থক্যগুলো নির্ণয় করতে হলে উভয় শ্রেণীর অর্থাৎ ভালো এবং খারাপ দুই ধরণের মানুষের সংগেই আপনাকে বেশ কিছুদিন চলতে হবে বা মিশতে হবে। তাহলে আপনি নিজেই আপনার বিবেক এবং বুদ্ধি দিয়ে ভালো খারাপ নির্নয় করতে পারবেন।

একজন ভালো মানুষের বৈশিষ্ট্য হলো তার দ্বারা কারও কোন উপকার না হলেও অন্তত কারও কোন ক্ষতি হয়না বা হতে পারেনা । আর এ বিষয়ে আমাদের নবী হযরর মুহাম্মদ রাসুলুল্লাহ ( সাঃ ) বলেছেন, যে ব্যক্তি তার প্রতিবেশির নিকট ভালো, তিনিই সকলের নিকট ভালো।

অমানুষ নামের মানুষগুলো সাধারনত মানুষের ভেতরেই মিশে থাকে ।যা কিনা নতুন করে প্রমাণের প্রয়োজন পড়েনা। অন্যের হক নষ্ট করা, হত্যা এবং ধর্ষণ সহ প্রতিদিন আমরা অনেক খবর শুনতে পাই ,খারাপ ঘটনাগুলো মানুষ রূপী অমানুষ দের দ্বারাই ঘটে থাকে ।সকল খারাপা মানুষ বা অমানুষের মধ্যে বিশেষ কিছু মিল থাকে। তারা ভাবে, যা হয়ে যাই যাক , পৃথিবী গোল্লায় যাক, তাতে কিছু আসে যাইনা, তাদের স্বার্থ হাসিল হলেই হলো। খারাপ মানুষগুলোকে আপনি সহজেই দেখে চিনতে পারবেন না, বাইরে থেকে দেখতে এরা খুবই সাধারণ কিন্তু মনমানসিকতা বা অন্তর থাকে কলুষিত। শুধু মাত্র তারাই বুঝতে পারে যারা এদের কাছাকাছি থাকে তারাই এদের কলুষিত অন্তরের বিষাক্ত প্রতিক্রিয়া বুঝতে পারে বা অনুভব করতে পারে।


আরও পড়ুন - সবসময় হাসি-খুশি থাকার সহজ উপায়




ধার্মিকতা দেখে আপনি  ভাল মানুষ চিনতে পারেন।

একজন চরিত্রবান পুরুষ বা নারী অবশ্যই নিঃসন্দেহে ভাল মানুষ হতে পারে। চরিত্র এমন এক গুণ, যার এ গুণ আছে তার সব ই আছে।

স্বল্প ভাষী, নম্র, বিনয়ী , শালীনতা অবলম্বনকারী ও সুবিবেচক মানুষগুলো অবশ্যই ভাল মানুষ হয়ে থাকে। যারা মিষ্টভাষী তাদেরকে ভালো মানুষ বলা চলেনা ,কারণ মিষ্ট ভাষীরা মিষ্ট ভাষা দিয়ে অন্তরের পাপ লুকায়। মিষ্ট ভাষীরা নিজের সার্থ হাসিল করার জন্য মিষ্ট ভাষা ব্যবহার করে এবং অন্যের ক্ষতি করে।  তবে একজন ধার্মিক মানুষের মিষ্ট ভাষা অবশ্যই ব্যতিক্রম।

দায়িত্ব পালনে যারা সচেতন, তারা বেশিরভাগ ভাল মানুষ হয়। জুয়া ও মদ থেকে তারা মুক্ত, পর নারীতে আকৃষ্ট নয় । নারীর প্রতি তার মনোভাব থাকে সুন্দর, সাবলীল ও সরল প্রকৃতির । তারা মিথ্যা বলবে না, চোগলখুরী করবে না, কারোও সাথে কারোও দ্বন্দ ফেসাদ লাগানোর জন্য চেষ্টা করবেনা, ভালকে ভাল বলে মানবে, এবং খারাপকে খারাপ বলে পরিহার করবে।

ব্যক্তিত্ব ও আচরণের দিক থেকে প্রতিটি মানুষই আলাদা আলাদা হয়ে থাকে। প্রত্যেকেরই রয়েছে নিজস্ব চিন্তা ভাবনা ও স্বতন্ত্র লাইফ স্টাইল। যা অন্যদের থেকে তাকে আলাদা করে। প্রাচীন সামুদ্রিক শাস্ত্রে এই বিষয়ে অনেক তথ্য পাওয়া গেছে, যা দেখে একজন মানুষের স্বভাব ও তার ব্যক্তিত্ববোধ সম্পর্কে বোঝা যায়।

মানুষের মুখের গঠন, ও তার হাঁটার ধরণ কিংবা কথাবলার বাচনভঙ্গি প্রতিটি মানুষের আলাদা আলাদা হয়ে থাকে। কারো মুখের গঠন হয় লম্বা, আবার কারো চৌকো, আবার কারো হয়ে থাকে গোলাকার, । কেউ ধীরে বা আস্তে আস্তে হাঁটেন, কেউবা হাটেন দ্রুত। কেউ হাঁটে সামনের দিকে তাকিয়ে, কেউ আবার হাঁটেন মাটির দিকে তাকিয়ে। কথা বলার ক্ষেত্রেও রয়েছে প্রত্যেকেরই আলাদা আলাদা নিজস্ব স্টাইল। কেউবা আবার ধীরস্থিরভাবে গুছিয়ে নরম সূরে কথা বলতে পছন্দ করে। আবার কেউ স্থান-কাল-পাত্র বিবেচনা বা পরিবেশ পরিস্থিতি সম্পর্কে না বুঝেই হুট করে কথা বলতে শুরু করেন ।

আপনি যদি একজন সচেতন মানুষ হন তবে প্রথম সাক্ষাতেই অন্যের ব্যক্তিত্ব ও মনমানসিকতার স্তর সম্পর্কে বুঝতে পারবেন। এছাড়াও হাতের লেখা বা গ্রাফোলজির মাধ্যমেও অন্য কারো মনোবিক্ষণ করা যায়। গ্রাফোলজির মাধ্যমে কোনো পেশাক্ষেত্রের উপযুক্ত কর্মচারী নির্বাচন করা যায় এবং ব্যবসার ক্ষেত্রে ব্যবসায়িক পার্টনার নির্বাচন করতেও সহজ হয়।

চলার ধরণ:

মুখের গড়ন যেমন প্রতিটি মানুষের আলাদা হয়, তেমনি আলাদা হয় চলার ধরনও । ধরুন, পরিবারের সদস্য কিংবা বন্ধুদের সাথে কোথাও বেড়াতে গেলেন। হঠাত্‍ দেখেলন কেউ পরিবারের সদস্য কিংবা বন্ধু বান্ধবের কেউ একজন সাথে নেই। অন্যদের চেয়ে একটু এগিয়ে গেছেন বেশ দূরত্বে। সাধারণত যারা দ্রুত গতিতে হাঁটেন তারা সাধারণত আত্মবিশ্বাসী হয় এবং মানসিকভাবেও শক্তিশালী হয়ে থাকেন। এরা যে কোনো ধরনের কাজ দ্রুত শেষ করার প্রানপন চেষ্টা করে থাকেন। শারীরিক গঠনপ্রনালী যাই হোক না কেন, এরা মনোদৈহিকভাবে শক্তিশালী এবং যথেষ্টই প্রানবন্ত। এরা সহজেই রেগে যায় এবং সক্রীয় ।

শান্ত ও ভাবুক প্রকৃতির মানুষ সাধারনত ধীর গতিতে হাঁটেন । কোনো ধরনের ঝামেলায় জড়াতে পছন্দ করেন না এরা। হুট করে কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্তও নেন না এই ভাবুক প্রকৃতির মানুষগুলো। যে কোনো ধরনের কাজই তারা ধীরস্থিরভাবে করতে পছন্দ করেন।

আবার কিছু মানুষ আছেন যারা হাঁটতে হাঁটতে হঠাত্‍ থেমে যান। কিছুমুহূর্ত পর আবার হাঁটতে শুরু করেন। বাইরে গেলে পথিমধ্যে পকেট কিংবা ব্যাগ হাতড়ে নিশ্চিত হয়ে নেন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র অথবা অন্যান্য জিনিসপত্র ঠিক আছে কিনা। এরা সাধারনত কিছুটা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত ও ভুলোমনা হয়ে থাকে। এ ধরনের মানুষগুলো মাঝেমধ্যে শিশুসুলভ আচরণ করে থাকেন। প্রায়ই ভুল করে প্রয়োজনীয় কাজ রেখে অন্যকাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। ছোটো বড় সবার মধ্যে এমন আচরণ লক্ষ্য করা যায় ।

ভালো বা মন্দ যেটাই হোক না কেনো মানুষ চেনা তেমন কোনো কঠিন কাজ নয়। আপনি যদি নিজে ভালো মানুষ হয়ে থাকেন বা হওয়ার জন্য আন্তরিকভাবে চেষ্টা করতে থাকেন তাহলে খুব সহজেই মানুষ চিনতে পারবেন। যাদের মনমানসিকতা খারাপ তারা প্রায়ই মিথ্যার আশ্রয়  নিয়ে থাকে, প্রচুর ভুল করে থাকেন এবং সত্যকে অস্বীকার করেন বা কম গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। তবে কে মিথ্যা বলছে, কে ভুল করছে এবং সত্যকে অস্বীকার করছে সেটা ভালোভাবে বোঝার জন্য আগে নিজেকে সঠিক পথে চালনা করা অতীবো জরুরী । কারণ প্রতারকরা সহজে প্রতারকদের চিনতে পারে না। চিনতে পারে সৎ ব্যক্তিরা কারণ তারা মেধাবী ।

জানুন মধু খেলে কি হয় - মধু খাওয়ার নিয়ম এবং মধুর অসাধারণ গুনাগুন


যে ৭ টি স্বভাব মানুষের জীবন নষ্ট করে দিতে পারেঃ

১ রাগ , হিংসা, এবং যেকোন মাত্রাতিরিক্ত আবেগ - এসকল মনোভাব পোষণ করলে শুধু ক্ষতির পরিমাণটাই বাড়াতে পারে।

২। সমাজের প্রতি উদাসীনতা ও উশৃংখলতা - মানুষ যাদের সফল বলে, তারাই তো সফল। সকলের বা সমাজের উপকার হয় এমন কাজ করুন।

৩। কৃতজ্ঞতাবোধের অভাব ও অহংকারী হলে - নিজের ক্ষুদ্রতা এবং সীমা বদ্ধতাকে উপলব্ধি করার ক্ষেত্রে, মানবিক জীবন যাপনের ক্ষেত্রে বাধার সম্মুক্ষীন হয়ে দাঁড়ায় ।

৪। লোভ-লালসা - লোভ-লালসা এবং লোভের কারণে অন্যের হক আত্বসাত করা। এটা মানুষকে দিগবিদিক জ্ঞানশূন্য করে ফেলতে পারে।

৫। দায়িত্ব জ্ঞ্যানের অভাব - ভালোর জন্য যা করণীয়, সেটা করুন। দয়া করে কারো ক্ষতি করবেন না।

৬। পরিবার , বিশ্রাম, কাজ এবং বিনোদন, এসবের মধ্যে সামঞ্জস্য আনতে না পারলে। উত্তরাধিকার সূত্রে যত সম্পত্তিই থাক না কেন, সবাইকেই কাজ করতে হয়। এবং নিজেকে সুস্থ রাখা ও উৎফুল্ল রাখা অতীবো জরুরী।

৭। অপচয়কারী এবং মাত্রাজ্ঞানের অভাব - সময় এবং সম্পদ দুটোই সীমিত। অপচয় একটা বদভ্যাসের মত যা খুবই খারাপ দিন বয়ে আনতে পারে।

৭টি কারনের বাইরেও  ভালো অথবা নিরপেক্ষ স্বভাবও কিছু থাকে, যে স্বভাব গুলোর জন্য মানুষ অন্যের দ্বারা প্রচন্ডরকম ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। যেমন-

প্রতিটা কাজে ও কর্মে অতিরিক্ত নিখুত হওয়ার চেষ্টা করা ঠিকনা। সুখ শান্তি ও ভালোবাসা নিয়ে টিকে থাকতে গেলে অনেক সময় কম্প্রমাইজ করতে হয়। সবসময় নিজেরটাকে বড় ভাবলে বা বড় করে দেখলে চলে না।

অসৎ পরিবেশে কৌশলী না হয়ে অতিরিক্ত সরলতা হলো বড় ধরনের বোকামি। সমাজে বা আপনার আশেপাশে অনেক মানুষ আছে সবাই আপনার মহত্ব বুঝবে না। ভালোবাসা ও সুপরামর্শের অভাব। বড় কাজের একজন সূ-পরামর্শদাতা থাকা ভালো।



লক্ষ্য যত বড় হবে , ঝুঁকিও থাকে তত বড়, মহৎ কিছু বা ভালো কিছু করতে গিয়ে যারা সফল হওয়ার আগেই সর্বস্বান্ত হয়ে যায়, তাদের কথা বর্তমান সমাজের কেউ মনে রাখে না।

আরো অনেক লেখা যায়, আর ভাল মানুষ চিনতে লন্ডন যেতে হয় না। আপনার বাবা-মাও হয়ত আপনার দেখা দুনিয়ার সবচেয়ে ভাল মানুষ হতে পারে।

Post a Comment

1 Comments

Ads 4