Auto Ads 1

কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা । ঘরে বসেই কিসমিস তৈরির নিয়ম



শুকনো আঙ্গুর থেকে তৈর কিশমিশ বা কিসমিস। কিসমিসের ইংরেজি নাম Raisin ( রেইসিন ) ।কিসমিস বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে উৎপাদিত হয় থাকে এবং কিসকিস সরাসরি খাওয়া যায় ও বিভিন্ন খাদ্য রান্নার সময় উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এই কিসমিস প্রাচীনকাল থেকে শক্তি বা ক্যালরির চমৎকার উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

কিসমিস কিভাবে তৈরি হয়

আঙ্গুর শুকিয়ে কিসমিস তৈরি করা হয় সূর্যের তাপ অথবা মাইক্রোওয়েভ অর্থাৎ ওভেনের সাহায্যে। তাপের ফ্রুক্টোজগুলো জমাট বেঁধে পরিণত হয় কিসমিস। আর এভাবেই তৈরি করা হয় মিষ্টি স্বাদের কিসমিস।

কিসমিসের পুষ্টি উপাদান

সবার প্রিয় এই কিসমিসে রয়েছে পটাশিয়াম, আর এই পটাশিয়াম হার্টকে ভাল রাখতে সাহায্য করে এবং দেহের খারাপ কোলেস্টরল দূর করতেও সাহায্য করে। এছাড়াও কিসমিসে রয়েছে আয়রন যা রক্তাল্পতা কমাতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। আরও রয়েছে কার্বোহাইট্রেট, যা দেহের এনার্জি জোগাতে কার্য্যকরি ভূমিকা রাখে। মহিলারাই বিশেষত রক্তাল্পতায় ভোগে থাকেন, তাই চিকিৎসকরা মহিলাদেরকে কিসমিস খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন যা মহিলাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে বিশেষ উপকারি।

কিসমিসের ওজন অনুসারে ৭২% শর্করা থাকতে পারে যার বেশিরভাগ ফ্রুক্টোজ এবং গ্লুকোজ। 

কিসমিসে প্রায় ৩% প্রোটিন এবং ৩.৭% –৬.৮% ডায়েটার ফাইবারও রয়েছে। ২০১২-তে আমেরিকান কলেজ অফ কার্ডিওলজির ৬১ তম বার্ষিক বৈজ্ঞানিক অধিবেশন  উপস্থাপিত উপাত্ত থেকে জানা যায় যে রক্তচাপের হালকা পরিমাণে বৃদ্ধি পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে কিসমিসের নিয়মিত সেবন (দিনে তিনবার) রক্তচাপকে অন্যান্য সাধারণ স্ন্যাকস খাওয়ার তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করতে পারে।

কিসমিসের ব্যবহারবিধি

এই কিসমিস যেকোন মিষ্টি খাবারের স্বাদ এবং সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য  ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এছাড়াও পোলাও, কোরমা এবং অন্যান্য অনেক খাবারে কিসমিস ব্যবহিত হয়। কিসমিসকে বলা হয় শুকনো ফলের রাজা । এই সোনালী-বাদামী রংয়ের চুপসানো ভাঁজ হওয়া ফলটি মানব দেহের জন্য খুবই শক্তিদায়ক।

শুকনো কিসমিস খাওয়ার চাইতে কিসমিস ভিজিয়ে খেলে বেশি উপকার। কিসমিস খাওয়ার সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে সারারাত কিসমিস পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। পরের দিন সকালে শুধু কিসমিস গুলো খাওয়া অনেক স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। বিশেষ করে যাদের পাইলস আছে তাদের জন্য খুবই উপকারি এই ভেজানো সারারাত ভেজানো কিসমিস।

ভেজানো কিসমিসে থাকে আয়রন, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফাইবার। তাছাড়া এতে থাকা প্রাকৃতিক চিনি শরীরের কোন ক্ষতিও করে না। যাদের হাই ব্লাডপ্রেসারের সমস্যা রয়েছে তারা এই ভেজানো কিসমিস খেলে প্রেসার কন্ট্রোলে রাখে । কিসমিস ভেজানো পানিও শরীরের পক্ষে  বেশ উপকারি।


কিসমিসের উপকারিতা

ক্যান্সার প্রতিরোধ

কিসমিসে ক্যাটেচিন নামক একধরনের অ্যান্টিওক্সিডান্ট থাকে যা শরীরে ভেসে বেড়ানো ফ্রি র‍্যাডিকলগুলিকে লড়াই করে নিঃশেষ করে। এটা জানা গেছে যে শরীরের এই ফ্রি র‍্যাডিকলগুলিই ক্যান্সার সেলের স্বতঃস্ফুর্ত বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং মেটাস্টাসিসএও সাহায্য করে। কিসমিস দৈনন্দিন খাবারের তালিকাতে রাখলে শরীরে ক্যাটেচিন এর মতন শক্তিশালী অ্যান্টিওক্সিড্যান্ট এর মাত্রা বৃদ্ধি পায়,ফলে ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে বা যারা এতে আক্রান্ত, তাদের শরীরে বৃদ্ধির পরিমাণ খানিকটা হলেও কমিয়ে দেয়।

রক্তস্বল্পতা কমায়

কিশমিশ অ্যানিমিয়া বা রক্তস্বল্পতা কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এটি আয়রনের খুব ভালো উৎস। দেড় কাপ কিশমিশে ১.৩ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে। এই পরিমাণ কিশমিশ একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারীর শরীরের দৈনিক আয়রনের চাহিদার ৭ শতাংশ এবং পুরুষের চাহিদার ১৬ শতাংশ পূরণ করতে পারে।  আয়রন ছাড়াও এতে রয়েছে কপার, ম্যাগনেশিয়াম ও পটাশিয়াম। আয়রন শরীরের লোহিত রক্তকণিকা তৈরি ও কোষে অক্সিজেন সরবরাহ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আর এই কাজে আয়রনকে সাহায্য করে কপার, ম্যাগনেশিয়াম ও পটাশিয়াম। তাই আয়রনজনিত অ্যানিমিয়ার সমস্যা হলে খাদ্যতালিকায় রাখুন কিশমিশ।

সুস্থভাবে ওজন বাড়ায়

সব ড্রায়েড ফ্রুট যেমন খেজুর কাজুবাদাম ইত্যাদির মতই, কিসমিস সুস্থ উপায়ে ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। কারণ এতে আছে প্রচুর ফ্রুক্টোজ, গ্লুকোয ও পোটেনশিয়াল এনার্জিতে ভরপুর এই কিসমিস। বডি বিল্ডার বা অ্যাথলিটদের ক্ষেত্রে কিসমিস খেতে বলা হয় কারণ তাদের প্রচুর এনার্জি লাগে বা ওজন বাড়ানোর জন্য ক্ষতিকর কোলেস্টেরল এড়িয়ে কিসমিস খেলে সুস্থভাবে ওজন বাড়তেও সাহায্য পাওয়া যায়। 

ডায়াবেটিস প্রতিরোধ

শুনতে আশ্চর্য লাগলেও, কিছু কিছু পরীক্ষায় দেখা গেছে যে কিসমিস পোস্টপ্রান্ডিয়াল ইন্সুলিন রেস্পন্সকে নামিয়ে দেয়, যার মানে দাঁড়ায় যে কিসমিস খেলে লাঞ্চ বা ডিনারের পরে শরীরে যে ইনসুলিনের হঠাত্‍ বৃদ্ধি বা ঘাটতি দেখা দেয়, তা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। লেপটিন আর ঘ্রেলিন নামক দুটি হোরমোনের রিলিজেও কিসমিস সাহায্য করে, যেগুলি শরীরকে সিগনাল দেয় কখন খিদে পেয়েছে বা কখন যথেষ্ট পরিমানে খাদ্য গ্রহণ করা হয়েছে। তাই কিসমিস খেলে অত্যাধিক খাওয়া রোধ করা সম্ভব।  তবে অধিক পরিমাণে কিসমিস খেলে সমস্যা হতে পারে, তাই অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাবেন, বিশেষ করে যাদের ডায়াবেটিস আছে তারা। কারণ ফ্রুক্টোজ বা গ্লুকোজ ডায়াবেটিস-এর রোগীর জন্য মারাত্মক হতে পারে।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে

কিসমিসে থাকা পটাশিয়াম রক্তের চাপ কমাতে সাহায্য করে। শরীরে থাকা উচ্চমাত্রার সোডিয়াম, রক্তচাপ বাড়ার প্রধান কারণ। কিসমিস শরীরের সোডিয়াম মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

কিসমিসে ভিটামিন এবং খনিজগুলির সাথে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস এবং পলিফেনলগুলির মতো অন্যান্য যৌগগুলির মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান রয়েছে। এগুলি আমাদের সিস্টেমে ফ্রি র‌্যাডিকালগুলোর সাথে লড়াই করতে, এগুলিকে স্থিতিশীল করতে এবং তাদের শ্বেত রক্তকণিকা সহ আমাদের কোষগুলিকে অক্সিডেটিভ ক্ষতির কারণ হতে রোধ করে যা আমাদের ইমিউন সিস্টেম গঠন করে।

ঘুম ভালো হয়

ঘুম ভালো না হলে শারীরিক অসুস্থতার পাশাপাশি মানসিক অসুস্থতাও দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে যাদুকরী ভূমিকা পালন করে কিসমিস। কিসমিসে যে আয়রন রয়েছে তা ভালো ঘুমে সাহায্য করে। আমরা সবাই জানি, আয়রন এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ যা শুধুমাত্র হিমোগ্লোবিনের উত্পাদন বৃদ্ধি করে না বরং বিপাক ক্রিয়া উন্নত করে।

হাড়ের স্বাস্থ্য

কিসমিসে পাওয়া যায় আরো এক উপাদান, ক্যালসিয়াম, যা হাড় ও দাঁতের জন্য খুব প্রয়োজন। এছাড়াও, বোরন নামক এক মাইক্রো নিউট্রিয়েন্টও কিসমিসে থাকে যা সঠিক ভাবে হাড় গঠন হতে সাহায্য করে এবং ক্যালসিয়ামকে তাড়াতাড়ি শুষে নিতে শরীরকে সাহায্য করে। মাইক্রো নিউট্রিয়েন্ট শরীরে খুব অল্প পরিমাণে দরকার বলেই মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট হিসেবে পরিচিত কিন্তু শরীরে এর উপস্থিতির গুরুত্ব অসীম। তাই বোরন মেনোপজ ঘটে যাওয়া নারীদের মধ্যে অস্টিয়োপোরসিস এবং হাড় ও জয়েন্ট এর জন্য খুব উপকারী।

কোষ্ঠ্যকাঠিন্য দূর করে

কিসমিসে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে যা শরীরের পরিপাকক্রিয়ায় দ্রুত সাহায্য করে। নিয়মিত কিসমিস খেলে খাবার সহজে হজম হয় এবং শরীরের কোষ্ঠ্যকাঠিন্যর মত সমস্যা দূর করে এই কিসমিস।

জ্বর সারাতে

কিসমিসে আছে ফেনল ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস, যার জীবাণুনাশক শক্তি, অ্যান্টিব্যাক্টিরিয়াল এবং অ্যান্টিওক্সিড্যান্ট বৈশিষ্ট্য ব্যাক্টেরিয়া এবং ভাইরাল ইনফেকশানের জন্য হওয়া জ্বর কমাতে সাহায্য করে।

চোখের স্বাস্থ্যে

চোখের জন্য আদর্শ খাবার। কিসমিস দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়। কিসমিসে রয়েছে ভিটামিন-এ ও বিটা ক্যারোটিন।


ঘরে বসে নিজেই বানিয়ে ফেলুন কিসমিস

ঘরে বসেই বানাতে পারেন এই কিসমিস। বানানোও কিন্তু খুবই সহজ! প্রথমে বাজার থেকে আঙুর কিনে আনতে হবে, তারপর আঙুর গুলোর বোঁটা ছাড়াবেন এরপর বোটা ছাড়ানো আঙুরগুলো ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে এবং ধোয়া আঙুরগুলো পরিস্কার একটি পাত্রে বা কাপড়ে করে রোদে শুকাতে দিতে হবে। দেখবেন আঙুরগুলো আসতে আসতে শুকিয়ে কিসমিসে রুপান্তর হয়ে যাচ্ছে। এভাবে টানা একমাস আঙুর গুলো রোদে রাখতে হবে  । তাহলেই তৈরি হয়ে যাবে আপনার সুস্বাদু ও পুষ্টিতে ভরপুর কিসমিস।


প্রথমা আলো কিসমিস সম্পর্কে তথ্যগুলো সংগ্রহ করেছে - হেলথ লাইন, স্টাইল ক্রেজ, মেডিকেল নিউজ টুডে, ওয়েল অ্যান্ড গুড; এই সকল অনলাইন পোর্টাল থেকে ।

চিত্রসূত্র -  Neva Kuruyemiş on Unsplash

Post a Comment

1 Comments

  1. Download the blackjack cheat-sheet (it's 점보카지노 free) and print it or put it aside on your cell phone to maintain it always with you if you play. Would you stand if your beginning hand was value five points? This game performs like solitaire however the action is competitive and challenges your mind to keep observe of all the playing cards. The Malta Gaming Authority, more generally identified as|often identified as} the MGA, is a well-renowned iGaming regulator. The group safeguards gamers' rights and goals maintain up} high standards in the industry.

    ReplyDelete

Ads 4