Auto Ads 1

কতোটা লবন খাওয়া প্রয়োজন মানব দেহের জন্য এবং লবন বেশি খেলে কি হয়



লবণ সোডিয়াম ক্লোরাইড (NaCl) দ্বারা গঠিত একটি রাসায়নিক যৌগ যা লবণের বৃহত্তর শ্রেণীর অন্তর্গত। লবন বা নুন হলো একটি খনিজ উপাদান। লবণ এক ধরনের প্রাকৃতিক স্ফটিক যা খনিজ লবণ বা হ্যালাইট নামেও পরিচিত। সমুদ্রের পানিতে প্রচুর পরিমাণে লবণ থাকে। মহাসাগরে প্রতি লিটার পানিতে প্রায় ৩৫ গ্রাম (১.২ আউন্স) কঠিন পদার্থ থাকে,যার লবণাক্ততা ৩.৫%।

প্রাচীনকালে লবন প্রক্রিয়া

প্রাচীনকালে লবণ প্রক্রিয়াকরণের কিছু নজির রয়েছে । খ্রিস্টপূর্ব প্রায় ৬০০০ সালের দিকে বর্তমান রোমানিয়ার অঞ্চলে বসবাসকারী লোকেরা লবণ আহরণের জন্য সাগরের পানি ফুটাতো বা সিদ্ধ করত ।

সমুদ্রের পানি, অগভীর জলাশয়ে খনিজ পদার্থ সমৃদ্ধ ঝর্ণার পানি বাষ্পীভবনের মাধ্যমে অথবা লবণের খনি থেকে লবণ প্রক্রিয়াজাত করা হয় ।

লবনের নামকরন

লবণ বা নুন দুটি শব্দই এসেছে ইন্দো-ইরানীয় বা আর্য ধাতুমূল (সংষ্কৃত ও আবেস্তান) নৃণ থেকে, নুন বা নমক/ নিমক হল এর অর্ধ তৎসম রূপ, আর লবণ হল এর তদ্ভব রূপ, অর্থাৎ, নৃণ>নুন/নমক/নিমক>লবণ/লবন।

আরও জানুন 👇

টমেটো খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং পুষ্টি উপাদান সমূহ

লবনের উপকারিতা

লবণ বা সোডিয়াম ক্লোরাইড শরীরের জন্য একটি প্রয়োজনিয় যৌগ। সোডিয়াম স্নায়ু ও পেশির কাজের জন্য অপরিহার্য ভূমিকা রাখে এবং শরীরের তরল নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা রয়েছে লবনের। লবন শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও কার্য্যকরি ভূমিকা পালন করে।

কিডনি, লিভার ও হার্ট, থেকে শুরু করে , অ্যাড্রিনাল গ্ল্যান্ডের মতো মানব দেহের বিশেষ অংশগুলোর সঠিক নিয়মে কাজ করতে কিছুটা হলেও লবণের ভূমিকা রয়েছে।

পুষ্টি বিশেষজ্ঞগন বলেন, একজন মানুষের দৈনিক ৫ গ্রামের কম লবণ গ্রহন করলে রক্তচাপ এবং স্ট্রোক, করোনারি হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায় সাথে কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ এর ঝুকিও কম থাকে।

থাইরয়েড

থাইরয়েড গ্রন্থি সঠিকভাবে কাজ করার জন্য শরীরে খনিজ আয়োডিন প্রয়োজন। বিভিন্ন ধরনের খাবারে আয়োডিন পাওয়া যায়। বেশির ভাগ লবণেও এখন আয়োডিন যুক্ত করা হয়।

রক্ত

ব্লাড ভেসেল ও সেলগুলোকে লবণ কিছুটা সংকুচিত করে রাখে বলে শরীর গরম থাকে ।

কাশি

শুকনো কাশির সময় মুখে সামান্য লবণ রাখলে ঘন ঘন কাশির হাত থেকে কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যায়। 

লবণের অপকারিতা

  • বেশি লবন খেলে শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ বের হতে বাধা সৃষ্টি করে। ফলে ইউরিক অ্যাসিড, বাত ব্যথার মতো সমস্যা গুলো দেখা দেই।
  • লবণ শরীরে পানি ধরে রাখে। বেশি লবণ খেলে হাই ব্লাড প্রেশারের আশঙ্কা বেড়ে যায়।
  • লবণ হলো এক ধরনের স্ট্রেস ফুড। সিমপ্যাথেটিক নার্ভ সিস্টেমকে উদ্দীপিত করে থাকে।
  • বেশি মাত্রায় লবন খেলে কিডনির ওপর প্রভাব ফেলে। ফলে কিডনি দুর্বল হয়ে যায়।
  • অতিরিক্ত পরিমানে লবন খেলে তা হাড় থেকে ক্যালসিয়াম শুষে নেই এবং হাড়ের ক্ষতি করে।

কাচা লবণ খেলে কি হয় জানুন

চামচ মেপে লবণ খাওয়া যেমন সম্ভব নয়। তাই প্রতিদিন লবণ গ্রহণে সতর্ক থাকা উচিত সকলকেই তাই দৈনিক ৬ গ্রামে সীমিত রাখতে হলে  কাঁচা লবণ খাওয়া বাদ দিতে হবে। এমনকি সালাদ ও বিভিন্ন টক ফল লবণ দিয়ে মাখিয়ে খাওয়া বন্ধ করতে হবে। এমনকি লবণ ভেজে খাওয়াও উচিত নয় ।

স্বাস্থ্য গবেষকগণ বলেছেন, কাঁচা লবণ খেলে  রক্তসঞ্চালন প্রক্রিয়া ও স্নায়ুতন্ত্রের উপরেও খারাপ প্রভাব পড়ে ।

রান্না করা খাবারে কাচা লবণ ছিটিয়ে খেলে ক্ষতি বেশি আরও বেশি হয়ে থাকে। খাবারে বাড়তি লবণ খাওয়া মানে শরিরকে অসুস্থতার ঝুকিতে ফেলা । রান্না করা হলে লবণের লৌহযৌগের সরলীকরণ ঘটে এবং তা খুব সহজেই শোষিত হয়ে যায়। কিন্তু কাঁচা লবণের লৌহযৌগ একইরকম থাকে ফলে কাচা লবন চাপ আরও বেশি বাড়িয়ে দেই। এর ফলে কাচা লবণে শরীরে রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়।

লবণ কম খাওয়াও ক্ষতিকর

বেশি লবণ খাওয়া যেমন উচ্চ রক্তচাপের জন্য দায়ী তেমনি লবণ একেবারে না গ্রহণ করাও শরীরের জন্য বেশ ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। এতে মৃত্যু ঝুঁকিও রয়েছে। গবেষকগণ বলেছেন, হৃদরোগ ও অন্যান্য কারণে মৃত্যুর হার লবণ বেশি খায় এমন মানুষের তুলনায় লবণ খায় না এমন মানুষদের সংখ্যাও একেবারে কম না ।

আরও পড়ুন 👇

ঢেঁড়সের উপকারিতা ও পুষ্টি উপাদান
বেগুণের গুনাগুন ও পুষ্টি উপাদান


চিত্রসূত্র - Photo by Nixon Johnson from Pexels

Post a Comment

0 Comments

Ads 4